দ্য সিলেট ডেস্ক:

সিলেট বিভাগের তিন জেলায় পৃথক ঘটনায় ৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে ১ গৃহবধূসহ দুইজন, পানিতে ডুবে একজন এবং বিদ্যুতায়িত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সিলেট: সিলেট নগরীতে পারিবারিক কলহে গৃহবধূ শাহেদা বেগম (২৯) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি দুই সন্তানের জননী। শাহেদা সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার আব্দুর রহমানের স্ত্রী।
গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানার ওসি হারুনুর রশীদ জানান, তাদের সংসারে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
হবিগঞ্জ: রোববার মধ্যরাতে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ পুকুর থেকে আবুল মনসুর (১৫) নামে এক মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মনসুর শহরতলীর বড় বহুলা দারুল ইরশাদ ওয়াদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া বহুলা মাদ্রাসার ছাত্র এবং উপজেলার আলাপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, মধ্যরাতে ঈদগাহ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ পুকুরেেএকটি মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। তার মৃত্যু নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও পুলিশ বলছে- পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, গভীর রাতে কে বা কারা মনসুরকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে ঈদগার পুকুরে মরদেহ ফেলে রাখে।
এদিকে, সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে মনসুরের হত্যাকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে দারুল ইরশাদ ওয়াদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া বহুলা মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ। বক্তারা নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি শাহাবুদ্দিন শাহীন বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পুকুরের পানিতে ডুবে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ যানা যাবে। এছাড়াও পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দাবীর প্রেক্ষিতে পুলিশ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি তদন্ত করছে।
এদিকে, সোমবার সকাল ১১টার দিকে চুনারুঘাট উপজেলার শাহজীবাজার রাবার বাগানে হাবিব মিয়া (২১) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হাবিব মিয়া মাধবপুর উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের হামাল মিয়ার ছেলে।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুরে আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাবিব মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
সুনামগঞ্জ: জেলার দোয়ারাবাজারে বিদ্যুতায়িত হয়ে আখলুছ মিয়া (৪০) নামে এক যুবক মারা গেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের পানাইল পুরানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আখলুছ মিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন সন্ধ্যায় আখলুছ মিয়া নির্মাণাধীন ঘরে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে তাকে ছাতক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।