দ্য সিলেট

বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২
বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২

সিলেটে নদ-নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই

দ্য সিলেট প্রতিবেদন |

সংগৃহীত ছবি।

টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারাসহ সবকটি নদনদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জেলার সবকটি নদনদীর পানি ক্রমাগত বেড়েছে। এরই মধ্যে নদনদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। বিপরীত চিত্রও আছে। উজানের ঢল ওঠানামার কারণে দু’য়েকটি পয়েন্টে পানি কিছুটা কমেছে।

শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাঠানো রিপোর্টে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে একদিনের ব্যবধানে পানি বেড়েছে ১৭৩ সেন্টিমিটার। গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৮৮ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। শনিবার পানি বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্ট পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

এ নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল এই পয়েন্টে পানি ছিল বিপৎসীমার ২৫২ সেন্টিমিটার নিচে। একদিনের ব্যবধানে পানি বেড়েছে ২২৩ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের আমলশীদ পয়েন্টে একদিনের ব্যবধানে ৩৫৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় এই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৫৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।

এ নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে শনিবার ছয়টায় পানি বিপৎসীমার ২২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এক দিনের ব্যবধানে এই পয়েন্টে ২৪১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। গতকাল এই পয়েন্টে পানি ছিল বিপৎসীমার ৪৬৪ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার।

নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি ১০২ সেন্টিমিটার এবং শেরপুরে ১১৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই দুই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ও ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।

এদিকে সারি গোয়াইন নদীর পানি শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও ৬১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এই পযেন্টে পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার। আজ সন্ধ্যায় ১০ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এ নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকালে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৭ সেন্টিমিটার। এছাড়া জাফলংয়ের ডাউকি নদীরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় পানি বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্লাবিত হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে তা দাঁড়িয়েছে ২২৫ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সুরমা, কুশিয়ারাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

তিনি আরও বলেন, সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেইসাথে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতেও ভারি বর্ষণ হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আজ সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত) চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারতে বৃষ্টি হলেই সিলেট উদ্বেগ বাড়ে। কারণ চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল নামে। সেই ঢলের পানি নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে।

এদিকে সিলেটের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী বুধবার (৪ জুন) পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসাথে উজানেও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে নদ-নদীতে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্লাবন দেখা দিতে পারে।

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ