দ্য সিলেট

মঙ্গলবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
মঙ্গলবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে ‘বাংলাদেশ’

দ্য সিলেট ডেস্ক:

বাংলাদেশ আবারো এক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা হারাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিতর্কিত সুপারিশমালা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন ক্ষমতার টানাপোড়েন। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘সংকট’ শব্দটি নতুন নয়। কিন্তু এবার পার্থক্য হলো- এই সংকট সমাধানের কোনো নেতা নেই, কোনো নিশ্চিত দিকনির্দেশনা নেই। সরকার নিজের অবস্থান রক্ষায় ব্যস্ত, বিরোধীরা দ্বিধায়, ছোট দলগুলো বিভক্ত, আর জনগণ উদাসীন।

এবারের সংকটের উৎস জুলাই জাতীয় সনদ ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে। এই সনদ অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা ও রাজনৈতিক রূপরেখার কেন্দ্রবিন্দু। এই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার তাদের সুপারিশমালা জমা দেয় অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। কিন্তু কমিশনের সুপারিশই এখন নতুন সংকটের জন্ম দিয়েছে। বিএনপি সরাসরি বলেছে, এটি অগ্রহণযোগ্য। কারণ, আলোচনায় যেসব বিষয়ে মতবিরোধ ছিল বা আলোচনায় আসেনি, সেগুলোও সুপারিশে ঢোকানো হয়েছে।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে দ্বিমত জানিয়েছি, সেগুলো বাদ দিয়ে এমন কিছু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো আলোচনা হয়নি। এটা ঐকমত্য নয়, একতরফা প্রস্তাব।’

এদিকে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি চায় নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট। তাদের দাবি, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন দেরি করবে, ততদিন বৈধতা হারাবে।’ গত বৃহস্পতিবার তারা নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ করে গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি দেয়।

অপরদিকে বিএনপি গণভোটের আগে নির্বাচনকালীন পরিবেশ ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে চায়। তাদের মতে, এই সরকারের হাতে গণভোট মানে একতরফা জনমত সংগ্রহ। এই বিরোধ থেকেই এখন যে গভীর সংকট বাস্তব রূপ নিচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, নভেম্বরের মধ্যে যদি গণভোটের রূপরেখা নির্ধারিত না হয়, তাহলে বিরোধী দলগুলো আবারো রাস্তায় নামবে। জামায়াত ইতোমধ্যে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে, এনসিপি ‘দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছে। এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো নাজুক হতে পারে।

তারা বলছেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় আছে, যেখানে রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত মানে প্রশাসনিক বিপর্যয়। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার আলোচনায় ফিরতে হবে।

যদি দ্রুত আস্থা ও আলোচনার পরিবেশ তৈরি না হয়, তাহলে এই সংকট কেবল রাজনৈতিক অস্থিরতা নয়- একটি দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় অচলাবস্থায় রূপ নিতে পারে। এখন সামনে প্রশ্ন একটাই- বিএনপি কি সত্যিই রিলে রেসের কাঠি ধরবে, নাকি সবাই মিলে দেশের রাজনীতিকে আরো এক অনিশ্চিত পথে ঠেলে দেবে?

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ