দ্য সিলেট

রবিবার , ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২

সিলেটে ছোঁয়াচে ‘স্ক্যাবিস’ রোগের সংক্রমণ বাড়ছে

জৈষ্ঠ প্রতিবেদক |

ছবি: সংগৃহীত।

সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত আড়াই মাসে শুধু সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোস-পাঁচড়া জাতীয় এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

হাসপাতালটির বহির্বিভাগ জানায়, গত আড়াই মাসে এই রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৩৫৫ জন। বিশেষ করে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাবে বেশি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণ মানুষ অনেক সময় ‘স্ক্যাবিস’কে খোস-পাঁচড়া বলে উল্লেখ করে। গরমের সময়ে এই ছোঁয়াচে রোগটির প্রাদুর্ভাব বেশি হলেও এখন সারা বছরই দেখা দেয়। এছাড়াও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, গরম-আর্দ্র পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্নতার অভাব এই রোগ ছড়ানোর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ।

এদিকে, সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালে স্ক্যাবিস রোগের বহুল প্রচলিত কয়েকটি ওষুধের সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা। তবে সংশ্লিষ্টেদের দাবি, পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে।

রোগীরা বলছেন, স্ক্যাবিসের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী একটি লোশন সরকারি হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধগুলো কিনতে হচ্ছে।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্যমতে, সবশেষ চলতি মাসের ১৯ জুন পর্যন্ত স্ক্যাবিসের চিকিৎসা নিয়েছেন তিন হাজার ৭৩৪ জন। এপ্রিল মাসে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ২৭১ জন। মে মাসে এই হাসপাতালে স্ক্যাবিসের চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৩৫০ জন।

এদিকে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালেও বাড়ছে স্ক্যাবিসে আক্রান্তদের সংখ্যা। বিশেষ করে যেসব এলাকা বারবার বন্যা আক্রান্ত হচ্ছে সেসব এলাকায় এই রোগ বেশি দেখা দিয়েছে।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রতিদিনই হাসপাতালে স্ক্যাবিসসহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগে আক্রান্তদের ভিড় থাকছে। বিশেষ করে গত কয়েক মাস ধরে গ্রামঞ্চল থেকে এ ধরনের রোগী বেশি আসছেন।

তিনি আরও বলেন, স্ক্যাবিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। তবে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি বড় আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি মূলত ব্যক্তির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর নির্ভর করে। এজন্য নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, অর্থবছরের শেষ মাস হওয়ায় কিছু কিছু ওষুধ যেগুলো খুব বেশি চলে সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যে ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ