দ্য সিলেট প্রতিবেদন |

প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লেগে থাকে। এ সময়টাতে স্থানীয় ও বাইরের পর্যটকের ঢল নামে। তবে এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে সিলেটে দেখা দিয়েছে পর্যটক–খরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (৯ জুন) ঈদের তৃতীয় দিনেও সিলেটের হোটেল-মোটেল অর্ধেক কক্ষ খালি পড়ে আছে। রোববার (৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও হোটেল-মোটেল ৩০-৪০ শতাংশ কক্ষ পূর্ণ ছিল।
এদিকে ঈদের দ্বিতীয় দিনে সাদাপাথর, জাফলং, রাতারগুলসহ জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোতে প্রত্যাশার চেয়ে দর্শনার্থী কম ছিল। স্থানীয় কিছু দর্শনার্থী ছাড়া সিলেটের বাইরের পর্যটকের খুব একটা দেখা মিলেনি।
এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিলেটে বন্যা, বৃষ্টিপাত ও সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র কয়েকদিন বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে। সিলেটের বাইরের পর্যটকেরা সিলেট এখনও বন্যাকবলিত রয়েছে বলে ধারণা করছেন। তাছাড়া পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর খুলে দেওয়া হলেও সেটির প্রচার কম হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে।
এ অবস্থায় পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। এখনো সিলেটের অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ফাঁকা থাকায় পর্যটন ব্যবসায় ধস নামতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
স্বাভাবিকভাবেই ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা সিলেটের সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, লালাখাল ও পান্তুমাইসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসেন। এবছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পর্যটক অনেক কম।
সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের তোয়াহির মিয়া বলেন, অন্যান্য বছর ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন সাদাপাথর ঘাট থেকে জিরো পয়েন্টে নৌকাগুলো ৪০০-৪৫০ ট্রিপ দিয়ে থাকে। গতকাল (রোববার) মাত্র ১০০ ট্রিপ হয়েছে। পর্যটক একেবারে কম ছিল।
জাফলংয়েরও একই অবস্থা। হোটেল-রিসোর্টগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিসোর্টগুলোতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যটক বুকিং দিয়েছেন। হাতেগোনা কিছু রিসোর্টে অবশ্য বুকিং রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। অথচ অন্যান্য সময়ে এসব হোটেল-রিসোর্টে কক্ষ পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে।
জাফলং হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু বলেন, বছরের এ সময়টায় পর্যটকের চাপ সামলানোই কঠিন হয়; অথচ এবার হোটেলের অনেক কক্ষ এখনও ফাঁকা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ইনচার্জ মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বন্যার কারণে তুলনামূলকভাবে এবার পর্যটক অনেক কম। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটন স্পটগুলোতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
সিলেট হোটেল ও গেস্ট হাউস ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন, গতকাল সিলেটের হোটেল-মোটেলগুলো ৩০-৪০ শতাংশ বুকিং ছিল। অবশ্য আজ (সোমবার) তা বেড়ে ৫০ শতাংশের উপরে আছে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাত ও বন্যার একটা প্রভাব পড়েছে। অনেকে অগ্রীম বুকিং দিয়েছিলেন। কিন্তু বন্যার খবর পেয়ে তা বাতিল করেছেন। যার কারণে পর্যটক কম। তবে যেহেতু লম্বা ছুটি রয়েছে, আশা করছি পর্যটকরা বাকি দিনগুলোতে ঘুরতে আসবেন।