দ্য সিলেট প্রতিবেদন |

নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন বৃষ্টিপাতের এই ধরা আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে রোববার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমবে। টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটসহ অন্তত ৬ জেলায় স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় (শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত) সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৮৭ মিলিমিটার। এরপর সকাল ৯টা পর্যন্ত মাত্র ৩ ঘণ্টায় আরও ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

টানা বৃষ্টির কারণে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। জলাবদ্ধতার কারণে ঘরবাড়ি, সড়ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পানি ঢুকেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ, আখালিয়া, সুবিদবাজার, চৌহাট্টা সিভিল সার্জন কার্যালয়, মেজরটিলা, ইসলামপুর ও দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জমে থাকা পানি নামছে ধীরগতিতে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি দ্রুত নামিয়ে দিতে ড্রেনের ছিদ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগে যেসব ছিদ্রে নেট বসানো ছিল, সেগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে।’

আবহাওয়াবিদদের মতে, বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকলে পাহাড়ি ঢল এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ জেলার কিছু অংশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, মনু, ধলাই, খোয়াই ও সোমেশ্বরী নদী অববাহিকায় বন্যা পূর্বাভাস জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ, ও নেত্রকোনা জেলায় সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি দিবারাত্রি ‘কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে।

কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, এই কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য উপাত্ত মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহের মাধ্যমে পূর্বাভাস প্রচার করা হবে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, টানা বৃষ্টির কারণে সিলেট জেলার সারিগোয়াইন, সুনামগঞ্জের যাদুকাটা, মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই, হবিগঞ্জের খোয়াই এবং নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর পানি আগামী তিনদিন বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

চলমান পরিস্থিতি আগামী ২ থেকে ৩ দিন অব্যাহত থাকবে। এ সময় কিছু এলাকায় স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলেও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম।