দ্য সিলেট প্রতিবেদন ||

ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের চার উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। সড়কে বৃষ্টির পানি জমে সিলেট নগরীর বিভিন্ন নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে সিলেটে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ৯ ঘন্টায় ১৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নগরের নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জরুরি প্রয়োজনে যারাই বাইরে বেরিয়েছিলেন তাদেরকে বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে।
সরেজমিনে নগরের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, সুবিদবাজার, তালতলা, সুবহানিঘাট, কালিঘাট, দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা, উপশহরের তেররতনসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। এতে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও গাড়িগুলোকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
এদিকে ঢলের পানিতে জেলার চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এলাকাগুলো হলো- গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট। এসব উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকায় পানির প্রবল গতি ও ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত চব্বিশ ঘন্টায় অতিভারী বর্ষণের ফলে সিলেট বিভাগের সবকটি নদনদীর পানি বাড়ছে, তবে এখনো নদীগুলোর পানি বিপদসীমার নিচে অবস্থান করছে।
এদিকে জেলার জাফলংয়ে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নেমে পিয়াইন নদীতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢলটি পিয়াইন নদী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এতে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকায় প্লাবন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নদী পাড়ের বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
এরই মধ্যে জাফলংয়ের অধিকাংশ পর্যটন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন দুপুরে দ্য সিলেটকে জানান, সিলেটের আকাশে এখনো প্রবল মেঘ জমে আছে এবং বৃষ্টিপাত আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। এর ফলে নদীতে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, যেসব নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে সেসব এলাকায় আমরা তদারকি করছি। আমাদের সব প্রস্ততি আছে। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য ইতোমধ্যে নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।